Header Ads

Header ADS

মধ্যবিত্ত পরিবারের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ প্রাণীর নাম হচ্ছে- বাবা!

 বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত পরিবারের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ প্রাণীর নাম হচ্ছে- বাবা!

 


 
বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত পরিবারের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ প্রাণীর নাম হচ্ছে- বাবা!
বিয়ের আট-দশ-পনের বছর পরে বউয়ের সাথে আর আগের সেই ভালোবাসাটা থাকে না। ভালোবাসাটা অভ্যাসে পরিনিত হয়। নিত্যদিন আলু-পেয়াজ, বাচ্চার স্কুল-কলেজ ইত্যাদি আলাপে ঘুম নেমে আসে চোখে। একান্ত নিজের কথা, নিজের ভাবনা, ভালোলাগা কিছু বলার অবকাশ হয় না।
বিয়ের শুরুতে অথবা প্রেমিক জীবনে, হয়ত বাচ্চার নাম ঠিক করেছিলেন- দুইজন মিলে। অদ্ভুত রোমান্টিসিজম ছিল। সন্তান জন্মের পরে একরাশ দ্বায়িত্ব কাধে চাপে। সন্তানের স্কুল- ভালো রেজাল্ট- বিয়ে- বাড়ি- গাড়ি। এইসব আলাপেই দুইজন ব্যস্ত থাকেন। এক সময় হয়ত দুপুরে অফিসের ব্যস্ততার ফাকে ফোন দিয়ে স্ত্রীর সাথে নানা অর্থহীন গল্প গুজবে ভালোবাসা খুজে পেতেন। এখন দুপুরে ফোন দিলে হয়ত, স্ত্রী বলে উঠেন, 'ডিপোজিটের টাকাটা জমা দিয়েছো/কারেন্ট বিল, গ্যাস বিল দিয়েছো?'
বাসায় ফিরে দেখেন, স্ত্রী বাচ্চাদের হোমওয়ার্ক নিয়ে ব্যস্ত। যদি স্ত্রীকে বলেন, 'আসো একটু নিরিবিলি কথা বলি, আমাদের কথা বলি।' উত্তরে স্ত্রী হয়ত বলে উঠেন, ' ঢং করার জায়গা পাও না? আমার রান্না আছে! একটু পরে বলবা ভাত দাও' কিংবা হয়ত বলে উঠবেন, 'বাচ্চারা বড় হয়েছে, সে খেয়াল আছে?’ কোন কোন সময় হয়ত আমাদের মায়েরা ফ্রি থাকেন। দুই কাপ চা নিয়ে দু'জন বসে পড়েন পুরোন স্মৃতি রোমন্থনে। হঠাৎ করেই হয়ত প্রতিবেশির মেয়ের বিয়ের দাওয়াতের কথা মনে পড়ে। কমদামে, সন্মানজনক গিফট কেনার চিন্তা গ্রাস করে বসে দুজনকে।
বাবারা যে কতটা নিঃসঙ- তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ মেলে, যখন আমাদের মায়েদের সাথে তাদের অভিমান পর্যায় চলে। আমাদের বেশির ভাগ সন্তানই মা ঘেষা। বাবার সাথে কেমন যেন একটা দুরুত্ব থাকে। সন্তানেরা ভাবে, 'বাবা প্রানীটা কেমন। সেই সকালে বেরিয়ে যায়। রাতে ফিরে। দেখা হলে কেবল রেজাল্ট জিজ্ঞাসা করে। এমন কেন এই লোকটা?' মায়েরা সন্তানকে নিয়ে সংসার নামক পার্লামেন্টে ঐক্যজোট করে। বাবা দেখে তার সন্তানেরাও তার পক্ষে নাই। যাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তিনি বাবা-মা, ভাই-বোন,বন্ধু-বান্ধব সবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
যাদের সাথে বিছানা শেয়ার করেছেন, এক পাতে খেয়েছেন- সেই ভাই বোনেরাও সংসারের চাপে, জমি-বাড়ি-সম্পদ ইত্যাদি বৈষয়িক ঝামেলায় দুরের মানুষ হয়ে যায়।
বিভিন্ন কারনে এক সময়ের বোজম ফ্রেন্ডদের সাথেও সে রকম কন্টাক্ট থাকে না। কিংবা থাকলেও নানান রকম ইনভিটেশন, ছেলেমেয়ের রেজাল্টের খবর আদানপ্রদানে আটকে থাকে, সেই সকল যোগাযোগ।
কলিগদের সাথেও একটা কৃত্রিম গাম্ভীর্য বজায় রেখে চলতে হয়। যাকে বলে প্রফেশনালিজম।
কারো সাথে একত্রে বসে, নিজের মনের একান্ত কিছু কথা বলার কেউ থাকে না। কেউ না। মায়েরা হয়ত কথায় কথায় বলতে পারেন, 'আমি বাপের বাড়ি/বোনের বাড়ি চলে গেলাম।' কিন্তু বাবাদের চলে যাবার মত কোন জায়গা থাকে না। একরাত কারো বাসায় গিয়ে থাকার মত কোন জায়গাও অবশিষ্ট থাকে না।

No comments

Powered by Blogger.